প্লেনে দেওয়া খাবার খেতে এত খারাপ হয় কেন? দোষ কিন্তু আপনারই
এ যেন এক সর্বধর্মসমন্বয়। বিমানে যে-ই উঠুন, তিনিই বলেন, ‘‘খাবার মুখে তোলা যায় না।’’ হয়তো এই অভিযোগ যথার্থ। কিন্তু কখনও ভেবে দেখেছেন, কেন এই খাবারের স্বাদ এত খারাপ হয়?
কেন বিস্বাদ লাগে?
যদি ভাবেন, বিমান সংস্থার জন্য যাঁরা রাঁধেন, তাঁরা পাকা রাঁধুনি নন, ভুল করবেন। এমনটাও ভেবে নেওয়ার কোনও কারণ নেই যে, বিমান কর্তৃপক্ষ আপনাকে ঠকিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে বাজে খাবার খাওয়াচ্ছেন।
অন্য কাউকে দোষ দেওয়ার আগে দোষ দিন নিজেকে। একটি যুক্তি হিসেবে বলা হয়, ৩৫ হাজার ফিট উচ্চতায় প্রথমেই আপনার শরীরের যে অংশটি কাজ করা বন্ধ করে দেয়, তা হল টেস্ট বাড্স বা স্বাদ গ্রন্থি। ফলে, আপনি কোনও খাবারেরই স্বাদ পাবেন না, সেটা স্বাভাবিক। জার্মানির গবেষণা সংস্থা দ্য ফ্রনহফার ইনস্টিটিউটের তরফে দাবি করা হয়েছে, যে খাবার রেস্তোরাঁয় বসে সুস্বাদু লাগে, সে খাবারই বিমানে বিস্বাদ লাগতে পারে।
একই খাবার সমতলে এবং মাঝ-আকাশে বিমানের ভিতরে খেয়ে পরীক্ষা করে দেখেছেন গবেষকরা। স্বাদের পার্থক্য একেবারে আকাশ-পাতাল! কেন এমন হচ্ছে? ওই উচ্চতায় নোনতা এবং মিষ্টি, জিভের এই দু’টি স্বাদ পাওয়ার ক্ষমতা অন্তত ৩০ শতাংশ হ্রাস পায়। তবে অন্য স্বাদগুলি কমবেশি একই থাকে। ফলে, সব মিলিয়ে ব্যাপারটা যে খুব একটা সুস্বাদু হবে না, তা বলা বাহুল্য।
আরও একটি বিষয় হল ঘ্রাণ। একটি খাবারের গুণাবলি নির্ণয় করে স্বাদ এবং ঘ্রাণ একসঙ্গে। ওই উচ্চতায় আর্দ্রতা ১২ শতাংশের নীচে। এর প্রভাব মানুষের ঘ্রাণশক্তির উপরে পড়ে।
বিমানের ভিতর ক্রমাগত যে শব্দ হয়, তা একটা সময়ের পরে কান-সওয়া হয়ে যায় ঠিকই, কিন্তু গবেষকরা বলছেন, এর প্রভাবও খাবারের উপরে পড়ে। ওই ধরনের সিম্যুলেটেড শব্দে মিষ্টি স্বাদ পাওয়া যায় না বলে গবেষকরা জানাচ্ছেন।
Comments
Post a Comment